পৃথিবী—আমাদের এই বাসস্থান। মহাকাশের অসীমতায় এটি মাত্র একটি ক্ষুদ্র বিন্দু। billions of galaxies, trillions of stars-এর মাঝে আমাদের এই ছোট্ট নীল গ্রহটি যেন একটি ধূলিকণাও নয়। তবু এই ক্ষুদ্র বিন্দুতেই জমে উঠেছে মানুষের হাসি-কান্না, যুদ্ধ-শান্তি, প্রেম-ঘৃণা, জয়-পরাজয়ের অজস্র গল্প।
একটি বিন্দুতে গড়ে উঠেছে সভ্যতা, ভবিষ্যৎ, এবং সবচেয়ে বড় কথা—আয়োজন।
আমরা এখানে জন্মাই, ভালোবাসি, লড়াই করি
একজন মানুষ মাত্র ৬-৭ ফুট জায়গা দখল করে জন্মায়। কিন্তু তার স্বপ্ন থাকে আকাশছোঁয়া। কেউ চায় রাজা হতে, কেউ কবি, কেউ বিজ্ঞানী। কেউ গড়ে তোলে সাম্রাজ্য, কেউ বিলিয়ে দেয় সবকিছু। অথচ, মৃত্যুর পরও আমাদের দেহটুকু মাটি নিতে চায় খুব সামান্য জায়গা।
তবুও এই ক্ষুদ্র জীবনে আমরা সাজিয়ে রাখি বিশাল আয়োজন।
- জন্মদিন থেকে বিয়ের অনুষ্ঠান,
- ঈদ-পূজা থেকে নববর্ষ,
- অফিস থেকে রাজনীতি,
- প্রেম থেকে যুদ্ধ,
সব কিছুই ঘটে এই বিন্দু পৃথিবীর বুকে।
এই আয়োজনে কত কিছুই না থাকে!
কখনো রং-বেরঙের আলোয় ভরে যায় শহর, কখনো বৃষ্টিভেজা মাঠে ফুটে ওঠে গ্রাম্য উৎসব। কেউ অলিম্পিক নিয়ে মাতোয়ারা, কেউ বা মঞ্চে এক ছড়া কবিতা শুনিয়ে পুরো জনতাকে নীরব করে দেয়।
কিন্তু থেমে থাকে না আয়োজন।
মানুষ প্রতিনিয়ত নতুন স্বপ্নে, নতুন যুদ্ধে, নতুন চেষ্টায় মেতে থাকে। যে আয়োজন হয়তো একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে, তবুও আমরা থামি না। কারণ, আমরা জানি না কতটুকু সময় বাঁচব, কিন্তু বাঁচা যতটুকু সময়—তাতে প্রাণভরে বাঁচতে চাই।
আসল আয়োজক কে?
প্রশ্নটা গভীর। এত আয়োজন, এত আবেগ, এত কষ্ট, এত আনন্দ—সব কিছুর মাঝে কি আমরা কখনো নিজেকে প্রশ্ন করি, এই আয়োজনে আমার ভূমিকা কী?
আমি কি একজন ভালো মানুষ হতে পেরেছি?
এই বিন্দুতে আমার উপস্থিতি কতটুকু দরকারি ছিল?
উপসংহার
এই পৃথিবীটা ছোট, জীবনটা আরও ছোট। তবুও এই ছোট্ট জায়গাটাতেই আমরা বানিয়ে ফেলেছি এক মহাবিশ্ব—যেখানে প্রেম, ত্যাগ, ভুল, ক্ষমা, স্বপ্ন—সব কিছুই গাঁথা এক অনন্ত সুতায়।
তাই বলা হয়—
“ছোট্ট এই বিন্দুতেই মানুষের যত আয়োজন।”
এখানে আমরা হারাই, খুঁজি, ভালোবাসি, আর শেষে একদিন হারিয়ে যাই।
তবুও আয়োজনে ঘাটতি রাখি না, কারণ এটাই তো মানুষ।
Add comment